বাংলাদেশ

৪০০ সিনেমার প্রস্তাব পেয়েও দাঁড়ায়নি ক্যারিয়ার, কী ভুল ছিল আমিরের?

বিনোদন ডেস্ক : বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিষ্ট তিনি। অভিনয়দক্ষতা আর কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। বলিউডে প্রথম ১০০ কোটি আয় করা সিনেমা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমার মালিক তিনি। তিন দশকের বেশি সময় ধরে পর্দায় দেখিয়ে চলেছেন দাপট।

বলছিলাম মেগাস্টার আমির খানের কথা। তার ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘পিকে’ দেখে যেমন মানুষ হেসেছে; তেমনি রোমাঞ্চিত হয়েছে ‘ধুম থ্রি’, ‘দঙ্গল’ দেখে। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতে তার পথচলাটা ছিল ভুলে ভরা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে এসে সফলতার শিখরে পৌঁছান আমির।

‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, ক্যারিয়ারের প্রথম পর্যায়ে তিনি ‘কায়ামত সে কায়ামত তাক’ দিয়েই তারকা তকমা পান। ওই সিনেমার পর তিনি প্রায় ৪০০ সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলেন! কিন্তু তবু তিনি অনেক দিন তেমন কোনো হিট সিনেমা দিতে পারেননি। সম্প্রতি আমির খানের সিনেমা নিয়ে একটি উৎসবের আয়োজন হয়। ‘আমির খান: সিনেমা কা জাদুকর’ নামের এ উৎসবেই জাভেদ আখতারের সঙ্গে কথোপকথনে বসেছিলেন আমির। সেখানেই এসব কথা বলেন অভিনেতা।

আমির খান তার সিনেমাযাত্রা ও ‘কায়ামত সে কায়ামত তাক’-এর পরের সময়ের কথা প্রকাশ করে জানান, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি নিজের সিনেমা বাছাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেই খুশি ছিলেন না। তবে সে সময় তার কাছে প্রচুর সিনেমার অফার আসছিল। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘কায়ামত সে কায়ামত তাক আমাকে একটা বড় সুযোগ দিয়েছিল। এ সিনেমা মুক্তির পর আমি প্রায় ৩০০-৪০০ সিনেমার অফার পাই।’

অভিনয় শুরুর আগে আমির খান মূলত পর্দার পেছনে কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘আমি সে সময় পর্যন্ত নাসির হুসেন ও মনসুর খানের সহকারী হিসেবে কাজ করেছি কেবল। কিন্তু প্রথম সিনেমা সফল হওয়ার পর প্রচুর অফার পেতে শুরু করি। নানা জায়গা থেকে প্রযোজকরা এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন। আমি তখন নতুন। বুঝতে পারতাম না যে একটা সিনেমা মানে একটা দায়িত্ব।’

আমির খান ছিলেন মনসুর খানের ভাতিজা। সিনেমার সঙ্গে আমিরের সম্পর্ক বহু পুরাতন। তিনি সিনেমার ভেতর বাহিরের নানা খবর রাখতেন। আমির বলেন, ‘সে সময় অভিনেতারা ৩০-৫০টা সিনেমায়ও একই সময় কাজ করতেন। অনীল কাপুর সম্ভবত কম করতেন। তাও ৩৩টা সিনেমা একসঙ্গে নিয়েছিলেন হাতে। সে অবস্থা দেখে আমিও একবারে ৯-১০টা সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাই।’

আমির খানের কাছে সে সময় এত সিনেমা এসেছিল যে তার পক্ষে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করার মতো অবসরই ছিল না। তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নির্মাতার কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু যাদের সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখতেন, তারা তাকে কাজের প্রস্তাব দেননি। আমির বলেন, ‘আমি যে নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইতাম, তাদের কারো কাছ থেকে সিনেমার প্রস্তাব আসেনি। আমি যা পেয়েছি, তাই করেছি। এরপর একাধিক শিফটে অভিনয় করতে গিয়ে বুঝেছি, কত বড় ভুল করেছি। দিনে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়েছে। আমি একদমই খুশি ছিলাম না।’

আমির খানের ‘লাভ লাভ লাভ’, ‘আউয়াল নাম্বার’ ও ‘তুম মেরে হো’ খুব বাজেভাবে ফ্লপ করেছিল। তার হিট ক্যারিয়ারকে প্রায় তলানির দিকেই নিয়ে গিয়েছিল সিনেমাগুলো। সে সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “এ সময় থেকে মিডিয়া আমাকে ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’ বলতে শুরু করে আর আমিও বুঝতে পারি, শুধু এ তিন সিনেমা ব্যর্থ হওয়ায়ই বিষয়টা থামবে না। সামনে থাকা আরো ছয়টা সিনেমাও ব্যর্থ হবে। কারণ সিনেমাগুলো তো ভালো ছিল না। আমি আমার ক্যারিয়ারের পড়তি দশা দেখতে পাচ্ছিলাম।”

বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অভিনেতা। তার সর্বশেষ সিনেমা ‘লাল সিং চাড্ডা’র ব্যর্থতার পর চলচ্চিত্র থেকে বিরতি নেন আমির। এর আগে ‘থাগস অব হিন্দুস্তান’ সিনেমাটিও ব্যর্থ হয়। তাই অভিনয় ছেড়ে পরিবারকেই সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এ মেগাস্টার। এরইমধ্যে বিয়ে দেন মেয়ে ইরা খানের। তবে আবারও পর্দায় ফিরছেন মিস্টার পারফেকশনিষ্ট। তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সিনেমা হিসেবে খ্যাত ‘তারে জামিন পার’-এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসছেন অভিনেতা। এছাড়াও তার প্রযোজনায় মুক্তি পাবে ‘লাহোর ১৯৪৭’, যাতে অভিনয় করছেন সানি দেওল ও প্রীতি জিনতা।

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button