বাংলাদেশভারত

ত্রিপুরায় বাঁধ খুলে দিলো ভারত, হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। এতে এখন পর্যন্ত সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। বন্যার কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে জানা যায়, ত্রিপুরায় চারটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ৫ হাজার ৬০০ পরিবার নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যের দক্ষিণ ত্রিপুরা ও গোমতী জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বাগাফায় ৩৭৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার, বেলোনিয়ায় ৩২৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার এবং অমরপুরে ৩০৭ দশমিক ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ওইদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত হাওড়া, ধলাই, মুহুরি ও খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ত্রিপুরার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাওড়া নদী বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়, ধলাই নদী মৌলভীবাজারে, মুহুরি নদী ফেনী জেলায় এবং খোয়াই নদী সিলেটে প্রবেশ করেছে।

খোয়াইয়ের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনি চন্দ্রন জানিয়েছেন, খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার দুটি মহকুমা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের নদীর কাছে মাছ ধরা এড়িয়ে চলতে এবং ভূমিধসপ্রবণ এলাকা থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ত্রিপুরার গোমতী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তার অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন, গোমতী নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। এ কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ থেকে পানি ছাড়তে হবে।

তিনি জানিয়েছেন, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত বাঁধের তিনটি গেটের মধ্যে একটি খুলে দেওয়া হয়েছে।

ত্রিপুরায় উৎপত্তি হওয়া গোমতী নদী প্রায় ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করে কুমিল্লার ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় হু হু করে পানি ঢুকছে কুমিল্লা অঞ্চলে।

ত্রিপুরায় আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) মঙ্গলবার জানিয়েছে, ত্রিপুরায় আরও দুদিন ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

টানা এই বৃষ্টিপাত বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিদ্যমান নিম্নচাপের প্রভাবে এমন ভারী বৃষ্টি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে আইএমডি।

সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ত্রিপুরা টাইমস, এএনআই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button