‘ছদ্মবেশে’ বাজার পরিদর্শন করলেন উপদেষ্টা আসিফ, অতঃপর যা ঘটল
দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় বাজার স্থিতিশীল এবং নিত্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে তদারকির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এমনকি এ চেষ্টার অংশ হিসেবে স্বয়ং উপদেষ্টারাও ঘুরছেন বিভিন্ন বাজারে বাজারে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বাজার পরিদর্শন করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে বাজার পরিদর্শনের বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি।
ছবিতে দেখা গেছে, মুখে মাস্ক, মাথায় টুপি পরে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই দ্রব্যমূল্য যাচাইয়ে বাজার পরিদর্শন করছেন আসিফ মাহমুদ। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘ডিমের হালি ৬০ থেকে ৪৮ টাকা, লাউ প্রতি পিস ১০০ থেকে ৪০-৫০ টাকা ও কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ১৪০-১৫০ টাকায় নেমে এসেছে।’
সবজির মূল্য মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যদিও স্থান ও বাজারভেদে দামে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। শীতের সবজি বাজারে আসা শুরু হলে আরও কমে আসবে।’ এ সময় অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা।
উপদেষ্টার এ উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে ওই পোস্টের মন্তব্য ঘরে নেটিজেনদের প্রশংসা করতে দেখা যায়। আলী আরমান নামে একজন লিখেছেন, ‘একজন নেতা বাজারে গিয়ে বাজার দেখছে। এটা প্রশংসনীয় কাজ। আল্লাহ আপনাকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের তওফিক দিক। আমিন।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে যেকোনো ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত সরকার : এদিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সরকার করপোরেটদের হাতে বন্দি নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছে সরকার। শনিবার রাজধানীর টিএসসি মিলনায়তনে ভোক্তা অধিকার সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমদু বলেন, বিশ্বজুড়েই ভোজ্য তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি আছে। বন্যার সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের সম্পর্ক রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স কাজ করে যাচ্ছে। এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর কাঁচা মরিচের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা হয়েছিল। ঠিক সময় আমরা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় এবার দাম বাড়লেও ওই পরিমাণ নয়।
অর্থ পাচার ও ঋণ খেলাপির কারণে সরকার বাংলাদেশের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখতে সরকার সচেষ্ট আছে। ব্যক্তি অপরাধের জন্য ব্যক্তি শাস্তি পাবেন, কর্মীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সদিচ্ছা থাকলে নিত্যপণ্যের দাম কমানো সম্ভব জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা করপোরেটদের হাতে বন্দি নই। বাজার নিয়ন্ত্রণে যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছে সরকার। মাঠ প্রশাসনকে সক্রিয় করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সেখানে রদবদল হচ্ছে। দক্ষ কর্মকর্তাদের মাঠে পাঠানো হচ্ছে, যেন জনকল্যাণ করতে পারে।
টাস্কফোর্সে ছাত্র প্রতিনিধি যোগ করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন সংশোধন করে আরও বেশি শক্তিশালী করার কথা ভাবা হচ্ছে।
কেউ যদি মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেট ভেঙে সরাসরি কৃষক থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছাতে চায়, তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা জানালেন আসিফ মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করা হয়। সেখানেও মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে চলে যায়। সরাসরি জিটুজির মাধ্যমে পণ্য আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।