বাংলাদেশ

জাবির নাম থেকে যেভাবে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে ইসলামি চিন্তাবিদ মিজানুর রহমান আজহারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। যেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ‘মুসলিম’ শব্দটি যুক্ত করেছেন। অর্থাৎ তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’। এরপরই সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

এর আগে জাহাঙ্গীর নগরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্যে আসা নিয়ে কয়েকটি ছাত্রসংগঠন প্রতিবাদ জানায়। ছাত্রসংগঠনগুলো দাবি করেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে ছাত্রশিবিরের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪২তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করা হয়।

তবে শিবিরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, জাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়নি। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা এলেও এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

এই আলোচনা নতুন রূপ নেয় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারির এক ফেসবুক পোস্টের পর। সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বুধবার নিজের ফেসবুক পেজে লিখেন, এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন নাম থেকে ‌‘ইসলাম’ ও ‘মুসলিম’ শব্দ মুছে দেওয়ার অন্যতম ভিকটিম ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’।

এরপর জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারীও তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’ উল্লেখ করে পোস্ট করেছেন। এরপর নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নামের বিভিন্ন ছবি শেয়ার করছেন।

জানা যায়, ১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট তৎকালীন সরকার এক অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার পূর্ব নাম জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখে ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’। এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত।

১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। পরে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হলে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ১৯৭০ সালের শেষের দিকে ঠিক করা হয়, কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একটি স্বার্থান্বেষী মহল মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে দেয়।

সোর্স: দৈনিক দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button