খামেনির অবস্থা গুরুতর
৮৫ বছর বয়সী আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি গুরুতর অসুস্থ। সে কথা মাথায় রেখে গোপনে দেশের পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত করেছে ইরান। তেহরান খামেনির দ্বিতীয় পুত্র মোজতবা খামেনিকে দেশের পরবর্তী প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছে। ইসরায়েলি মিডিয়া ওয়াই নেট নিউজ ইরান ইন্টারন্যাশনালকে উদ্ধৃত করে এখবর জানিয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে খামেনি শীঘ্রই পদত্যাগ করতে পারেন কারণ তিনি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় জর্জরিত।
খামেনির দাবিতে ইরানের অ্যাসেম্বলি অফ এক্সপার্টের ৬০ জন সদস্যের বৈঠকের পর ২৬ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং গোপন বৈঠকটি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ডাকা হয়েছিল এবং লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উত্তরসূরি নির্ধারণ করা। বৈঠকে আলোচনা হয় এবং শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে মোজতবাকে উত্তরসূরি নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
ওয়াই নেট যোগ করেছে যে, খামেনি এবং তার প্রতিনিধিদের পীড়াপীড়িতে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়। জনবিক্ষোভের আশঙ্কায় সভার কার্যক্রম অত্যন্ত গোপন রাখা হয়েছিল। সদস্যদের বলা হয়েছিল বৈঠকের কোনো খবর যাতে বাইরে ফাঁস না হয়ে যায় সেদিকে নজর রাখতে। প্রতিবেদনে সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে খামেনি একটি মসৃণ উত্তরণ নিশ্চিত করতে তার জীবদ্দশায় মোজতবার হাতে লাগাম হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন। তার বিরুদ্ধে যে কোনও বিরোধিতাকে অগ্রাহ্য করার জন্যও এটি একটি কৌশল। মোজতবার নির্বাচন বিস্ময়কর নয় কারণ তিনি নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত ছিলেন। সরকারী বৈঠকগুলিতে তাকে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করতেও দেখা গেছে।
ইসরায়েলের সাথে বিরোধ এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের কঠোর গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা পরিকাঠামোতে ইসরায়েলি গুপ্তচররা অনুপ্রবেশ করেছে এমন খবর প্রকাশের পর ‘উত্তরসূরি নির্বাচন’ অগ্রাধিকার হয়ে ওঠে ইরানের কাছে । তেহরানে হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহ এবং হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহের হত্যাকাণ্ডর পর খামেনির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় অনুগতদের তার কাছে যাবার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আটলান্টিক কাউন্সিলের মতে, তার ছেলে মোজতবাই একমাত্র ব্যক্তি যাকে তিনি বিশ্বাস করতে পারেন এবং ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করতে পারেন। বাবা সুপ্রিম লিডার হওয়ায় ইরানের মাটিতে বিপুল ক্ষমতাশালী মোজতবা। ২০০৯ সালে ইরানের গণ বিক্ষোভ সামাল দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলেন তিনি। দুই বছর আগে তাকে আয়াতুল্লাহ উপাধি দেওয়া হয়েছিল, যা সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার জন্য সংবিধানের একটি অপরিহার্য শর্ত।
সূত্র : দ্য উইক
সোর্স: দৈনিক দিগন্ত