বাংলাদেশ

চিন্ময়কে মুক্ত করতে ভারতের দ্বারস্থ ইসকন, দিল্লির হস্তক্ষেপ দাবি

চিন্ময়কে মুক্ত করতে ভারতের দ্বারস্থ ইসকন, দিল্লির হস্তক্ষেপ দাবি

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আটকের বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন)।

সেখানে তারা চিন্ময় দাসের মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করতে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) গভীর রাতে নিজেদের অফিশিয়াল এক্স (পূর্বের টুইটার) হ্যান্ডেলে টুইট করে একথা জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইকোনমিক টাইমস।

টুইটে ইসকন দাবি করেছে, সন্ত্রাসবাদের সাথে ইসকনের যুক্ত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং অত্যন্ত আপত্তিজনক। এ ধরনের অভিযোগ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।

টুইটে আরও দাবি করা হয়, “ইসকন ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে যেন তারা অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে যে আমরা একটি শান্তিপ্রিয় ভক্তি আন্দোলন।”

তারা ইসকন নেতা চৈতন্য কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধও জানায়। নিজেদের শান্তিপ্রিয় ভক্তি আন্দোলনের পথিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভারত সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ও বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য আহ্বানও জানিয়েছে ইসকন।

গভীর রাতে করা এই টুইটে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনকে ট্যাগ করেছে ইসকন।

এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মঙ্গলবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে।

এরপর গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। নগরীর কোতোয়ালি থানায় সেই মামলা দায়ের করেন ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এই মামলা করা হয়। এই ঘটনায় আগেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের নাম রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস।

মামলার আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা হলেন- ইসকনের চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী, গোপাল দাস টিপু, ডা. কথক দাস, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাস, রাজীব দাস, কৃষ্ণ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে ববি, তুষার চক্রবর্তী রাজীব, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাস, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাস।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে।

সূত্র: dailycomillanews

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button