বকেয়া শুল্ক: এস আলমের কাছে ২৪৬ কোটি টাকা চায় চট্টগ্রাম কাস্টমস

৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি আমদানির বিপরীতে এস আলম রিফাইন্ড চিনি শিল্পের কাছে ২৪৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা বকেয়া শুল্ক চেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।
কাস্টমস বন্ড কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টার জানতে পেরেছে, এস আলম গ্রুপের বন্ড ওয়্যারহাউজ থেকে পণ্য স্থানান্তরের সময় শুল্ক পরিশোধ করা হবে এমন শর্তে কোনো শুল্ক পরিশোধ না করেই অপরিশোধিত চিনি আন্ডার বন্ড (হোম কনজাম্পশন) সুবিধাটি ছেড়ে দিয়েছিল।
আইন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে তেল ও চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো বন্ড সুবিধার আওতায় আমদানি শুল্ক ছাড়াই তাদের আমদানি করা কাঁচামাল খালাসের অনুমতি পেয়েছে।
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে শুল্ক পরিশোধ না করেই স্থানীয় বাজারে পণ্য বিক্রি শুরু করে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রি।
কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রামের যুগ্ম কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আইন অনুযায়ী কাস্টমস ডিউটি পরিশোধ না করে কোনো পণ্য বাজারজাত করা যায় না- কোম্পানিটি ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি বিক্রি করেছে কিন্তু কোনো শুল্ক পরিশোধ করেনি।
এরপর ২২ আগস্ট ২৪৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা রাজস্ব দাবি করে কারণ দর্শানোর চিঠি দেন বন্ড কমিশনার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান।
কোম্পানি সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে বা ১৫ দিনের মধ্যে শুল্ক পরিশোধ করলে বন্ড কমিশনারেট ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব আদায়ের জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবে।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, বন্ড সুবিধা ব্যবহার করে পণ্য আমদানিতে কোম্পানিটি অতিরিক্ত কোনো অনিয়মে জড়িত কিনা তা নির্ধারণের জন্য ২০১৯ সালের সব আমদানি-বিক্রয় তথ্য পর্যালোচনা করার পরিকল্পনা করছে রাজস্ব কর্তৃপক্ষ।
এস আলম গ্রুপের অভ্যন্তরে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা পরিচালনা ও লেনদেন তদন্তে গত ২০ আগস্ট চারটি নিরীক্ষা টিম গঠন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অপর সহযোগী সংস্থা চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।
২০১৯ সাল থেকে শুরু করে গত পাঁচ বছরের সব ধরনের আর্থিক লেনদেন ও ক্রয়-বিক্রয় রেকর্ড পর্যালোচনা করতে টিমগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০ জন কাস্টমস কর্মকর্তার সহায়তায় আগামী ৩০ দিনের মধ্যে দলগুলোর পক্ষ থেকে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক ও মহাব্যবস্থাপক (কর্পোরেট) মোহাম্মদ আখতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।