বাংলাদেশ

বৃদ্ধকে ১১ টুকরো করে হত্যা, স্ত্রী-মেয়ে গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে অরুণ মিয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে ১১ টুকরো করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ওই ব্যক্তির স্ত্রী-সন্তানই তাকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় স্ত্রী মোমেনা বেগম ও মেয়ে লাকীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।

এর আগে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে পলিথিনে মোড়ানো অরুণ মিয়ার দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগমের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধে জড়ান অরুণ মিয়া। ২০১৮ সালে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানের প্রবাসে মৃত্যু হয়। পরে তার দেনা মেটাতে অরুণ মিয়া জমি বিক্রি করেন। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ আরও তীব্র হয়।

এরপর শুক্রবার নিখোঁজ হন অরুণ মিয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বরে হলে স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে টর্চ লাইটের সাহায্যে পলিথিনে মোড়ানো কিছু দেহাবশেষ দেখতে পান। পরে পুলিশে খবর দিলে ট্যাংক থেকে নয়টি পলিথিনে মোড়ানো ১১ টুকরো দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুবেল সেটি তার বাবার মরদেহ বলে শনাক্ত করেন।

এ ঘটনায় মোমেনা বেগম, তার ছেলে রাসেল এবং মেয়ে লাকীকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেই জিজ্ঞাসাবাদে অরুণ মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেন। এছাড়া ছেলে রাসেলের এতে কোনো সম্পৃক্ততা না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর বুধবার সকালে নিহত অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুবেল বাদী হয়ে মোমেনা বেগম ও সৎ বোন লাকীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

মোমেনা বেগমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল জানান, পারিবারিক কলহের জেরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা তাকে মাথায় আঘাত করেন এবং এতে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন। তারপর চাপাতি (টাঁকশাল) দিয়ে লাশ টুকরো টুকরো করে নয়টি পলিথিনে বেঁধে পার্শ্ববর্তী সৌদি প্রবাসী মনির মিয়ার সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন তারা। এ ঘটনায় মোমেনা বেগম ও তার মেয়ে মেয়ে লাকীকে আদালতের মাধ্যমে দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।

সোর্স: দৈনিক দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button