বাংলাদেশ

আমাদের দেহে রক্তকণিকা যেভাবে তৈরি হয়

রক্তের ভেতরে ভাসমান বিভিন্ন কোষকে বলা হয় রক্তকণিকা। রক্তের মোট পরিমাণের প্রায় ৪৫ শতাংশজুড়ে রয়েছে এই রক্তকণিকা। এগুলো নিমজ্জিত থাকে রক্তরসে। লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা—এই তিন ধরনের রক্তকণিকা আছে। মানবদেহে রক্ত উৎপাদনের কারখানা হলো অস্থিমজ্জা। আমাদের হাড়ের ভেতরে যে নরম ও স্পঞ্জের মতো টিস্যু থাকে, সেটাই অস্থিমজ্জা। শরীরের এই অংশে একধরনের বিশেষ কোষ তৈরি হয়।

এই প্রাথমিক কোষগুলোকে বলা হয় রক্তকোষ। আর যখন এই কোষগুলো রক্তে পরিণত হয় এবং প্লাজমায় ভাসতে থাকে, তখন সেগুলোকে রক্তকণিকা বলে। প্রাপ্তবয়স্কদের মেরুদণ্ড, বুকের হাড়, পেলভিক হাড় এবং উরুর হাড়ের ভেতরে লাল অস্থিমজ্জা থাকে। এগুলোই লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা উৎপাদনের কাজ করে।

অস্থিমজ্জা দেহের মোট রক্তকণিকার প্রায় ৯৫ শতাংশ তৈরি করে। এগুলো মূলত অস্থিমজ্জার স্টেম কোষ থেকে উৎপন্ন হয়। স্টেম কোষ হলো রক্তকণিকার প্রাথমিক ধাপ। এ কোষ ধীরে ধীরে লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকায় পরিণত হয়। স্টেম কোষ যখন পুরোপুরি পরিণত হয় না, তখন তাকে বলে ব্লাস্ট। কিছু ব্লাস্ট অস্থিমজ্জায় থাকে এবং সেখানেই পরিপক্ক হয়। অন্যগুলো দেহের বিভিন্ন অংশে চলে যায় এবং সেখানে গিয়ে পূর্ণ কার্যক্ষম রক্তকণিকায় পরিণত হয়।

অস্থিমজ্জার পাশাপাশি রক্ত সংবহনতন্ত্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো প্লীহা। এটি পাঁজরের নিচে বাঁ পাশে অবস্থিত একটি ছোট অঙ্গ। এর ওজন প্রায় ১৫০-২০০ গ্রাম। প্লীহাকে অনেক সময় ‘রক্ত ব্যাংক’ বলা হয়। কারণ প্লীহা রক্তকণিকার রিজার্ভার বা সংরক্ষণাগার হিসেবে কাজ করে এবং প্রয়োজন অনুসারে রক্তকণিকা সরবরাহ করে। দেহের পুরোনো ও ক্ষতিগ্রস্ত লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস করে শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদনে ভূমিকা রাখে এটি।

আরো সংবাদ
  • c
    C
  • c
    C

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button