বাংলাদেশ
ট্রেন্ড

ভারত তার নিয়মিত দুষ্কর্ম শুরু করে দিয়েছে

ইণ্ডিয়া আজ উজানে তাদের নিয়মিত দুষ্কর্মের আরম্ভ করে দিয়েছে। গোমতি নদীর ওপর ওদের তৈরি Dumboor Reservoir এর গেট খুলে দিয়েছে ওরা। এটাসস ইতিমধ্যে সকলের জানা রয়েছে আমাদের। ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থিত এই রিজারভয়েরে তিনটি Flap Gate আছে।

তন্মধ্যে গতকাল একটির এমন খুলে দেওয়াকে সাংবাদিকেরা রাজ্যটির বিগত ০৩ দশকের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলে বিবেচনা করছেন। বলা হচ্ছে যে, অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে ভারতের প্রদেশটিতে সকল নদ-নদী ইতিমধ্যে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এর মাঝে আবার Dumboor Gate খুলে দেওয়ার কারণে ভয়াবহ রূপ নিতে আরম্ভ করেছে বন্যা। ০৩ দশক পূর্বে যে পরিস্থিতিতে এই Gate খুলে দেওয়া হয়েছিল, আজকের পরিস্থিতিকে বিশ্লেষকরা এখন বিবেচনা করছেন তার থেকেও মারাত্মক হিসাবে।

বর্তমান এই গুরুতর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আমাদের সর্বপ্রথম করণীয় হলো –

০১| বন্যায় আক্রান্ত অঞ্চল সমূহে নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য পৌঁছাবার চেষ্টা শুরু করা। আশপাশের অভিজ্ঞ মানুষদের এই উদ্দেশ্যে সংগঠিত করতে আরম্ভ করা। ভারতের ত্রিপুরাতে ইতিমধ্যে বন্যা-পীড়িত মানুষের সাহায্যের জন্য National Disaster Response Force (NDRF) কে মোতায়েন করেছে ভারত সরকার। NDRF হলো ভারতের সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটা সংস্থা। যাদের দায়িত্ব এমন দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা।

এক্ষেত্রে আমাদের আর্মি, নেভি এবং এয়ারফোর্সকে যথাসম্ভব দ্রুত সীমান্তের এপারেও তৎপরতা শুরু করতে হবে। এখন পর্যন্ত মানুষ সাহায্যের আশায় অপেক্ষমান সর্বত্র। কোথাও এখন পর্যন্ত সাহায্য দৃশ্যমান নয়। ওদিকে উজানে আগামী দিনগুলোতেও প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করছেন সকলে। সেক্ষেত্রে এই দুর্যোগ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে এমন সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায়, দ্রুত সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা সকল অভিজ্ঞ জনশক্তির দুর্যোগ-কবলিত অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। মনে রাখবেন, মিলিটারি ইতিমধ্যে দেশজুড়ে ভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকায় তাদের বর্তমান আঞ্চলিক শক্তি দুর্যোগ-কবলিত অঞ্চলের পরিস্থিতি পুরোপুরি সামাল দিতে যথেষ্ট নাও হতে পারে। তাই, সাধারণ অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবীদের দ্রুততার সাথে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন।

০২| বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের বন্যা পরবর্তী Recovery Phase এ সাহায্যের জন্যও স্বেচ্ছাসেবকদের দল প্রস্তুত করা দরকার। এজন্য বিভিন্ন স্থান হতে Fund ও অন্যান্য সাহায্য সংগ্রহ করে নিপীড়িত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের হাতে স্বচ্ছতার সাথে তুলে দেওয়ার জন্য নিখুঁত ব্যবস্থাপনার আয়োজন করা প্রয়োজন।

এটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বন্যা জাতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের দেশের জন্য খুব কমই প্রাকৃতিক। এবং এক্ষেত্রে দূর্যোগ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অব্যবস্থাপনা অশুভ শক্তির স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে মানুষের পেটে খাবার না থাকলে তখন “ভাত দে, নয়তো মানচিত্র খাব” পরিস্থিতি হতে বেশি সময়ের দরকার হয় না।

০৩| আমাদের দেশের মানুষ এই বিশেষ দুর্যোগ কেন নিয়মিত হারে ঘটে, সে সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। তবে, বিশেষ করে গতকাল হতে হঠাৎ একটি চক্র তাদের এই সচেতনতাকে অজ্ঞতা হিসাবে প্রমাণ করতে মাঠে নেমেছে। আমাদের ভেতর যারা সরেজমিনে এই দূর্যোগে আক্রান্ত মানুষদের সাহায্যে যেতে পারছি না, আমাদের এখন কর্তব্য হবে অশুভ শক্তিটির এই প্রচেষ্টাকে পূর্ণ শক্তিতে রুখে দেওয়া।

মনে রাখবেন, উজানের প্রতিটি বাঁধ আমাদের জিম্মি করার লক্ষ্যে এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা মাথায় রেখে নির্মাণ করা হয়েছে। ওরা এর প্রত্যেকটি বাঁধ খুলে আমাদের ওপর পরোক্ষভাবে প্রতি বছর যুদ্ধ ঘোষণা করে। তাই, বাঁধ খুলে দিয়ে আমার দেশকে ভাসিয়ে দেওয়াটা আচমকা গুরুতর পরিস্থিতিতে পড়ে নেওয়া তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এমনটা মনে করবার কোনো সুযোগ নাই। বরং, বহু দশকের পরিকল্পনার ফলাফল হলো এই পরিস্থিতি। ওরা আমাদের নদীর গভীরতা কমিয়ে দিয়েছে। ভাটির দেশের স্রোতস্বিনী নদীগুলোকে বালুর মাঠে পরিণত করেছে। গোমতির পানি আজ মানুষের বাড়িতে উঠে এসেছে কেন? কারণ, ওরা নষ্ট করে দিয়েছে গোমতির স্বাভাবিক পথে বয়ে চলবার ক্ষমতাকে।

অতএব, কারো মিষ্টি কথায় ভুলবেন না। ওদের এভাবে নিয়মিত বাঁধ খুলে দেওয়া আমাদের ওপর ওদের পরোক্ষ আক্রমণ। এই স্রোতের পানিতে হারানো প্রতিটি প্রাণকে তাই ওদের আগ্রাসনের শিকার হয়ে ঝরে যাওয়া প্রাণ মর্মে বিবেচনা করুন। আর, আমাদেরকে এখন নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী দেশবাসীকে এই আক্রমণ হতে রক্ষা করতে হবে। তাঁদের সচেতন রাখতে হবে। এটাই এই আগ্রাসনের মুখে আমাদের বর্তমান করণীয়।

ধন্যবাদ।

— Revan M
আউটপোস্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button