বাংলাদেশ

ভারতে বিয়ে করতে এসে বউয়ের বদলে পাত্রীর বান্ধবীর গলায় মালা!

জুমবাংলা ডেস্ক : বিয়ে করতে এসে পাত্রীকে মালা না পরিয়ে, তা পরালেন পাত্রীরই এক বান্ধবীকে। পরে সেই ভুল শুধরাতে গিয়ে একের পর এক ভুল পাত্রের। তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি। রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিয়ের আসর। একমুহুর্ত দেড়ি না করে পাত্রের গালে চড় মেরে বসেন পাত্রী। এরপর ক্ষোভে, অপমানে বিয়েই ভেঙে দিলেন তিনি। এটি কোন বলিউড সিনেমার শ্যুটিং নয়। গত শনিবারের টানটান ওই ঘটনায় রীতিমত হুলুস্থুল পরে গেছে।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের বেরেলির নওগা ভগবান্তপুর গ্রামে একটি বিয়েতে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ২১ বছর বয়সী রাধার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ২৬ বছর বয়সী রবীন্দ্র কুমারের। বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। অনেকে খাওয়া দাওয়াও শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু ততক্ষণও দেখা নেই বরের। অবশেষে বেশ কিছুটা দেরিতে বরযাত্রীদের সাথে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে পৌঁছন পাত্র রবীন্দ্র কুমার।

এরপর বিয়ের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। হিন্দুর রীতি মেনে পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করেন। এরপর কনেকে মালা পরানোর পরিবর্তে, তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাত্রীর বান্ধবীর দিকে মালা ছুঁড়ে দেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পরিবারের সদস্য ও অতিথিরা ফিসফাস শুরু করতেই, নিজের ভুল বুঝতে পেরে তা সংশোধন করতে গিয়ে উল্টে ফের ভুল!

এবার সেই মালা খুলে এবার পাত্রীর পাশে থাকা এক পুরুষ বন্ধু এবং পরে উপস্থিত এক বয়স্ক অতিথির গলাতে সেই মালা পরিয়ে দেন পাত্র। এরপরই ক্ষুব্ধ রাধা দেবী পাত্রের গালে থাপ্পড় মেরে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যান।

এসময় হঠাৎ করেই দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। বর ও কনে- উভয়পক্ষ একে অপরের দিকে চেয়ার ছুঁড়তে থাকে। অবশেষে স্থানীয় কুলারিয়া থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

কনের পরিবারের পক্ষে স্থানীয় থানায় দায়ের করা এফআইআর অনুসারে, বরের পরিবার অতিরিক্ত যৌতুকের দাবি করেছিল। কনের বাবা জানান, বিয়ের আগে কিছু অনুষ্ঠানের জন্য তিনি আড়াই লাখ রুপি দিয়েছিলেন। বিয়ের দিন সকালে আরও ২ লাখ রুপি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটাও বরের পরিবারের জন্য যথেষ্ট বলে মনে হয়নি।

সম্পূর্ণ ঘটনার পিছনে রয়েছে আরেকটি কারণ। জানা গেছে রবীন্দ্র কুমার তার পছন্দের অন্য এক নারীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা না হওয়ায়, রাধা দেবীর সঙ্গে বিয়ের আসরে বিয়ের আগে বন্ধুদের সাথে মদ্য পান করেছিলেন রবীন্দ্র কুমার। আর তাতেই কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে কনের বান্ধবীর গলায় মালা পরিয়ে দেন। পাশাপাশি কনের পরিবার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

রাধা দেবীর ভাই ওঙ্কার ভার্মার অভিযোগ, ‘এই বিয়েতে তাদের ১০ লাখ রুপি খরচ হয়েছে। এছাড়াও পাত্রপক্ষ অতিরিক্ত পণ দাবি করেছিলেন। হয়তো তারা আমাদের পরিবারকে অপমান করতে চেয়েছিল। তাছাড়া নিজের পেশা নিয়েও মিথ্যা কথা বলেছিলেন রবীন্দ্র কুমার। একজন ট্রাক চালক হলেও নিজেকে একজন কৃষক বলে দাবি করেছিলেন।’

এ ঘটনায় বর ও তার কয়েকজন বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। পাশাপাশি কনের পরিবারকে অপমান করা এবং শান্তি নষ্ট করার অভিযোগে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। যৌতুক দাবি করার অভিযোগেও সংশ্লিষ্ট ধারায় বরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে রবীন্দ্র কুমারের মেডিকেল পরীক্ষা হলে তাতে প্রমাণিত হয় বিয়ের রাতে তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।

ইংরেজিকে যুক্তরাষ্ট্রের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা

জানা গেছে, বরের বন্ধুরা অবৈধ মদ কিনে তাকে খাইয়েছিলেন। এদিকে মদ বিক্রির অভিযোগেও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।

যদিও পরবর্তীতে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়ে নেন রবীন্দ্র কুমার। এমনকি তার পরিবারের সদস্যরা এই বিয়ের অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও, আর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে রাজি হননি রাধা দেবী।

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button