বাংলাদেশ

অপসারিত হচ্ছেন না ইউপি চেয়ার‍ম্যান ও মেম্বাররা! কারণ যা জানা গেল (ভিডিও)

সিটি করপোরেশন-পৌরসভার মতো অপসারিত হচ্ছেন না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার‍ম্যান ও মেম্বাররা। সাড়ে ৪ হাজার ইউপিতে দায়িত্বরতরাই পদে থাকছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। প্রাথমিকভাবে প্রশাসক নিয়োগের কথা হলেও সাড়ে ৬৯ হাজার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত সদস্যের বিকল্প সরকারি কর্মকর্তা পাচ্ছে না মন্ত্রণালয়।

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে পলাতক চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া, পদ্মবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। দুই ইউপিতে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা ইউএনও। কিন্তু সময় দিতে পারছেন না বাড়তি দায়িত্বে। এতে জন্ম-মৃত্যু, ওয়ারিশ সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

এমন সংকট নেই নওগাঁর বক্তারপুর ইউনিয়নে। এখানে দায়িত্ব পালন করছেন ইউপি চেয়ারম্যান। একই অবস্থা চুয়াডাঙ্গার শংকরচন্দ্র ও মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নে। যদিও অপসারণ আতঙ্কে আছেন চেয়ারম্যানরা।

বিষয়টি নিয়ে শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউল আলম সুজন বলেন, আমরা একদিন ছুটিতে থাকলেই মানুষের নানা সমস্যা তৈরি হয়। তারা সেবা পায় না। ইউপিকে সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার সাথে তুলনা করা ঠিক হবে না। কারণ এখানকার প্রত্যেকটি নাগরিক সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সেবা নিয়ে থাকে।

নওগাঁর ব্ক্তরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সারওয়ার কামাল বলেন, আমি তো ভোট চুরি বা অনিয়মের মাধ্যমে নির্বাচিত হইনি। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে জয় পেয়েছি। এখন যদি ঢালাওভাবে ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করা হয়, তাহলে সেটি অবিচার করা হবে। পাশাপাশি জনগণের জন্য দুর্ভোগও বয়ে আনবে।

জানা গেছে, সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ৪ হাজার ৫৭১ জন। মেম্বার বা সদস্য ৪১ হাজার ১৩৯। আর ১৩ হাজার ৭১৩ জন সংরক্ষিত সদস্য। আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে ইউপিতে অনুপস্থিত ছিল ১ হাজার ৪১৬ চেয়ারম্যান। এরমধ্যে অনেকে যোগদান করায় সাড়ে ৩’শ ইউপি এখন পরিচালিত হচ্ছে প্রশাসক বা কমিটির মাধ্যমে।

প্রাথমিকভাবে ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগের কথা হলেও সাড়ে ৬৯ হাজার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত সদস্যের বিকল্প সরকারি কর্মকর্তা পাচ্ছে না মন্ত্রণালয়। সব ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ দিতে হলে ৫৪ হাজারের মতো সরকারি কর্মকর্তা প্রয়োজন। যা বাস্তবে কঠিন হওয়ায় ইউপির জনপ্রতিনিধিদের বহাল রাখার পথে হাটছে সরকার।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, সাড়ে তিনশোর মতো ইউপিতে দায়িত্বশীল কেউ ছিল না। সেখানে প্রশাসককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করার কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। বাতিল করলে গ্রাম পর্যায়ে সেবাপ্রাপ্তিতে ধাক্কা লাগবে। কেননা, একটি গ্রাম নিয়েও ওয়ার্ড গঠিত। সেজন্য ইউপি ভেঙে দিয়ে গ্রাম পর্যায়ে সেবা পৌঁছে দেয়ায় ব্যঘাত হোক সেটি চায় না সরকার।

আপাতত প্রশাসক পরিচালিত সিটি-পৌরসভা-উপজেলা ও জেলা পরিষদে নির্বাচনের কোনো পরিকল্পনা হয়নি বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জনগণের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে নির্বাচন কখন হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে আগে। তাছাড়া সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কিনা- তা নিয়ে এখনও পরিকল্পনা করেনি অন্তর্বর্তী সরকার।

এলজিআরডি উপদেষ্টা বলেন, প্রশাসক পরিচালিত হলেও স্থানীয় সরকারের সেবা নিশ্চিতে কোনো ছাড় দেবে না মন্ত্রণালয়। সূত্র : যমুনাটিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button