বাংলাদেশ

রমজানে চোখের শুষ্কতা কেন বাড়ছে, করণীয় কী

লাইফস্টাইল ডেস্ক : যারা বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন বা দীর্ঘ সময় ধরে টিভি দেখেন অথবা ভিডিও গেম খেলেন, তাদের অনেকেই ড্রাই আইয়ের সমস্যায় ভোগেন। এসি বা ফ্যানের সরাসরি বাতাস, ঘরে কম আর্দ্রতা, শুষ্ক বা আধা শুষ্ক জলবায়ু, বায়ুদূষণের কারণে ড্রাই আই হয়। ডায়াবেটিস, সিজোগ্রেন সিনড্রোম, অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসের মতো পরিস্থিতিও চোখের শুষ্কতার জন্য দায়ী। অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টিহিস্টামিন ইত্যাদি ওষুধ চোখের শুষ্কতা ঘটাতে পারে। গর্ভাবস্থা ও মেনোপজের পরে নারীদের চোখ শুষ্ক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রমজানে পানিশূন্যতায় এ সমস্যা দেখা দেয়।

যে কারণে হয় : আমাদের চোখের প্রায় ৭৫ শতাংশই পানি। এ পানি শুকিয়ে গেলে চোখে সৃষ্টি হয় নানা সমস্যা। চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া অনেকগুলো রোগের লক্ষণও বটে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ড্রাই আই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের পানির উৎপাদন কমতে থাকে। ৫০ বছর বয়সের পর নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে ড্রাই আইয়ের প্রবণতা দেখা যায়। রমজান ও কারও কারও এর সমস্যা হতে পারে।

লক্ষণ : চোখে কিছু কাঁটার মতো লাগা, কিছু বিঁধে থাকা, চোখ দিয়ে পানি পড়া চোখের শুষ্কতার পূর্ব লক্ষণ। এ কারণে মাথাব্যথা থেকে জ্বর এবং নাকবন্ধ রোগও হয়ে থাকে। কারণে অকারণে মুখ শুকিয়ে যায়, কথা একটানা বললে খারাপ লাগে, মুখে পর্যাপ্ত লালাগ্রন্থি না থাকা, কেবল পিপাসা অনুভব করা, মুখ জড়িয়ে যাওয়া, এসব সমস্যা হলে বুঝবেন আপনি ড্রাই আই রোগে আক্রান্ত।

চিকিৎসা : চোখের শুষ্ক হওয়ার কারণ বের করে চিকিৎসা নিতে হবে। এজন্য চিকিৎসক চোখের পানির গুনগত মান, পরিমাণ ও গঠন সম্পকিত কিছু পরীক্ষা করবেন। ভিটামিন-এ’র ব্যবহার ও কারণ অনুসারে ওষুধ ব্যবহার করলে চোখের শুষ্কতা দূর করা যায়।

চিকিৎসকদের চমকে দিল বিরল ট্রিফেলিয়া রোগ, এক দেহে তিন পু..রুষাঙ্গ!

ঘরোয়া প্রতিকার : দিনে প্রচুর পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত কফি, অ্যালকোহল, ক্যাফিনযুক্ত অন্যান্য পানীয় কম পান করতে হবে। তরমুজ, শশা, স্ট্রবেরি, পিচ বেশি বেশি খেতে হবে। নিয়মিত চোখের ব্যায়াম করতে হবে। ডায়েটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার রাখবেন। একটানা অনেকক্ষণ তাকিয়ে না থেকে মিনিটে ১৫-৩০ বার চোখের পাতা পিটপিট করুন। ২০ সেকেন্ডের বেশি চোখ খোলা রাখবেন না। ২০ মিনিট পর অন্তত কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে কয়েক সেকেন্ড চোখকে বিশ্রাম দিন। এটি চোখের আর্দ্রতা বজায় রাখার দারুণ উপায়। কম্পিউটারে কাজ করার সময় চোখে আই প্রোটেক্টর স্পেক্টিক্যাল ব্যবহার করুন। বাইরে বেরোলে চোখে অবশ্যই ভালো মানের রোদ চশমা পড়ার অভ্যাস করা। হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো ডুবিয়ে সেই কাপড় নিংড়ে নিয়ে চোখের উপর পাঁচ মিনিটের রাখুন। তার পর আঙুলের হালকা চাপে চোখের উপরের ও নিচের পাতায় কাপড়টা মালিশ করলে চোখের মধ্যেকার ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে। পরিষ্কার তুলোয় নারকেল তেল দিয়ে চোখের উপর ১৫ মিনিটের জন্য রাখতে পারেন। দিনে বেশ কয়েকবার করা যায়। অ্যালোভেরা জেল চোখের শুষ্কতা কমাতে পারে। তবে এসব ঘরোয়াভাবে করতে পারেন সাময়িক স্বস্তির জন্য। সমস্যা গুরুতর হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ

আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button