বাংলাদেশ

দিনভর নানা নাটকীয়তার পর ইউপি চেয়ারম্যান আটক

জুমবাংলা ডেস্ক : কুড়িগ্রামের উলিপুরে দিনভর নানা নাটকীয়তার পর উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যান আটক হয়েছেন। তাঁর নাম রফিকুল ইসলাম। আজ সোমবার উপজেলার ১৩টি ইউপির চেয়ারম্যানদের নিয়ে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি ভিজিএফের চাল বিতরণ নিয়ে সভা শেষে বেরিয়ে তিনি আটক হন।

একই সভায় এসে আওয়ামী লীগ ঘরানার এক ইউপি চেয়ারম্যান কৌশলে সটকে পড়েন। তিনি তবকপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদে ঈদুল ফিতরে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণ নিয়ে সভা আহ্বান করা হয়। ওই সভায় ছয়জন ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে তাঁর কক্ষে সভা শুরু হয়। সভায় আওয়ামী লীগ ঘরানার ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতির খবর পেয়ে সেখানে থানা-পুলিশ সাদাপোশাকে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তবকপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান স্থানীয় কয়েকজনের যোগসাজশে তাঁদের মোটরসাইকেলে উঠে পুলিশের সামনে দিয়ে চলে যান।

এদিকে সভা শেষে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ধামশ্রেণী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম উপজেলা পরিষদ ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থান করতে থাকেন। এ সময় ভবনের ভেতরে ও বাইরে সাদাপোশাকে থাকা থানা-পুলিশ অবস্থান করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধামশ্রেণী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওই ভবন থেকে বের হননি। এ সময় স্থানীয়ভাবে বিভিন্নজন উপজেলা পরিষদ ভবনে যাতায়াত করেন। তাঁরা নানা কৌশলে চেয়ারম্যানকে বাঁচাতে তৎপরতা চালান। কিন্তু তৎক্ষণে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে উৎসুক জনতা ভিড় করতে থাকেন। এদিকে অফিসের সময় শেষ হওয়ায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ চত্বর ত্যাগ করেন।

অবশেষে বাধ্য হয়ে বিকেল ৫টার পর ধামশ্রেণী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ভবন থেকে নেমে এলে সাদাপোশাকে থাকা পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় সংবাদকর্মীরা চেয়ারম্যানকে আটক করার ছবি তুলতে গেলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয় বলে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন। পরে তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। রফিকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ হাড়ির ভাতিজা বলে জানা গেছে।

উপজেলা পরিষদ থেকে সটকে পড়া তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাকে গ্রেপ্তার করে আমার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দেওয়া হয়। বর্তমানে আমি সব মামলায় জামিনে আছি। আজ (সোমবার) উপজেলা পরিষদে ভিজিএফ কর্মসূচির বিষয়ে সভায় গেলে সেখানে সাদাপোশাকে পুলিশ অবস্থান নেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে সেখান থেকে আমি সরে পড়ি।’

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, ধামশ্রেণী ইউপি চেয়ারম্যানকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অপর এক ইউপি চেয়ারম্যান সটকে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ওই চেয়ারম্যান সেখান থেকে চলে যান। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি জামিনে রয়েছেন।

উলিপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে সকালে ভিজিএফের কর্মসূচি নিয়ে সভা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে কোনো চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়নি। তবে শুনেছি, সন্ধ্যার আগে পরিষদের বাইরে থেকে ধামশ্রেণীর ইউপি চেয়ারম্যানকে পুলিশ আটক করেছে।’

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button