২০০৩-৪ সালে আয়নাঘর তৈরি করে বিএনপি-জামায়াত সরকার!

DGFI নিয়ে কিছু কথা
ডিজিএফআই এর আয়নাঘর সম্পর্কে আমরা প্রথম জানতে পারি কিছু বছর আগে। যখন নেত্রনিউজ আয়নাঘর রিলেটেড ডকুমেন্টারি পাব্লিসড করে। এর আগে কিন্তু এদেশের মানুষ জানতোই না যে ডিজিএফআই এর এমন গোপন টর্চার সেল বলে কিছু আছে যেখানে অপজিশন পার্টির লিডার সহ বাংলাদেশ সরকার ও ভারত বিরোধী অনেক ইন্টেলেকচুয়াল ব্যক্তিকে বছরের পর বছর গুম করে রাখা হয়েছে; চলেছে অমানবিক নির্যাতন।
আমরা অনেকেই হয়ত এখনও বিশ্বাস করি ডিজিএফআই এর এই আয়নাঘর নামক টর্চার সেল শেখ হাসিনার আমলে তৈরি। কিন্তু তা নয়। তাহলে এই টর্চার সেল কবে তৈরি হয়েছে?
সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রমান সহ উল্লেখ করে যে, বাংলাদেশের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর আন্ডারে তিনটি টর্চার সেল অপারেট হয়, যেগুলোকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘Blackhole’ নাম দেয়।
চলুন জেনে নেই ব্ল্যাকহোলগুলোর লোকেশন কোথায় ছিল?
#Blackhole1 : বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নেভাল বেশ বিএনএস হাজী মুহসিন এর পাশ্ববর্তী ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর
#Blackhole2 : ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন কচুক্ষেতে একটি সিভিল রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ায়
#Blackhole3: জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আশেপাশে। খুব সম্ভবত কালশী থেকে খিলক্ষেতের মধ্যে অথবা উত্তরা বারো নাম্বার সেক্টর।
এখন আপনি কি ভাবছেন, এসব সেল তখনকার কেয়ারটেকার সরকার তৈরি করেছিল? আমিও তাই ভেবেছিলাম, কিন্তু না।
কিছুদিন আগে কথা হচ্ছিল একজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সাথে। যিনি বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা বাহিনীতে সার্ভিস দিয়েছেন।জানালেন- এসব গোপন সেল গুলো তৈরি হয়েছিল ২০০৩-০৪ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে।
ভয় পাবেন না, বিএনপি সরকার সেখানে কোনো সাধারণ মানুষ তো দূর, আওয়ামীলীগের কোনো নেতাকর্মীকেও নিতো না।
তাহলে সেখানে হতো কি?
আপনি নিশ্চয়ই জানেন দুই হাজার এক থেকে ছয়― জোট সরকারের আমলে দেশব্যাপী কি পরিমান স ন্ত্রা স বা দ, জং গী বাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। শায়েখ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে জে এম বি, হর কা তুল মুজা হিদী ন সহ বিভিন্ন গোষ্ঠী দেশকে অস্থিশীল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এসব স ন্ত্রা সী গোষ্ঠী ছিল সরাসরি ভারতীয় ইন্টিলিজেন্স এজেন্সি র এর মদদপুষ্ট। ভারতীয় ইন্টিলিজেন্স বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি স ন্ত্রা সী রাষ্ট্র হিসেবে সাব্যস্ত করতেই এসব কর্মকান্ড পরিচালনা করত।
অবস্থা যখন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিল তখন বেগম জিয়া প্রতিষ্ঠা করেন র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। সেই র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ এবং ডিজিএফআই এর যৌথ তত্ত্ববধানে তৈরি হয়েছিল এসব সেল, যেখানে ভারতীয় এজেন্ট, ভারতীয় ইন্টিলিজেন্সের মদদপুষ্ট স ন্ত্রা সী দে র জিজ্ঞাসাবাদ একইসাথে থ্যারাপি চলত।
এবার বুঝতে পারছেন, সেই র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করা কর্নেল গুলজারের উপর ভারতের এত রাগ কেনো ছিল যে পিলখানা বিদ্রোহে তার চোখ দুটোই তুলে ফেলা হয়েছিল?
এনিওয়ে…পরবর্তীতে ২০০৯ সালে লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে র এবং লীগ একত্রিত হয়ে প্রথমে সেনা অফিসার হ ত্যা করে এবং ডিজিএফআই নিয়ন্ত্রণে নেয়। যেই ডিজিএফআই এর মাধ্যমে ৫ আগস্ট অব্দিও আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। একইসাথে র তখন ডিজিএফআই এর এই সেলগুলোকেই ভারত ও আওয়ামীলীগ বিরোধীদের টর্চার করতে রি-অর্গানাইজ করে।
যারা আমাদেরকে আয়নাঘরের সন্ধান দিয়েছে, তারা আংশিক সত্য প্রকাশ করেছে, যা মিথ্যার চেয়েও ভয়ংকর।
এতে করে মানুষ সামগ্রিকভাবে ডিজিএফআই বিরোধী হয়ে গেছে। আমরা আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে কেন যাব, যদি তারা দেশপ্রেমিক হয়? যদি তারা দেশের জন্য কাজ করে?
ভারতীয় ইন্টিলিজেন্স এজেন্সি র এর অভ্যন্তরে কাজ করে তথ্য হাতিয়ে নিয়ে আসা ডিজিএফআই এজেন্ট দেওয়ান চাঁদ মল্লিক, কিংবা এস আব্দুল হাকিম কিংবা মোহাব্বত জান চৌধুরী― তারা দেশের গর্ব।
আমরা যেকোনো মূল্যে দেশে একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। এতদিন যাবৎ আমাদের এজেন্সি পরদেশ করায়ত্ত করে রেখেছিল। আমরা তার সংস্কার চাই। আমরা আবারও ভারতের যমদূত ডিজিএফআই কে দেখতে চাই।