ডেস্ক রিপোর্ট: হারি মারদেকা ২০২৪। আজ ৩১ আগস্ট স্বাধীনতার ৬৭তম বছরে পা দিল দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার শিল্পোন্নত দেশ মালয়েশিয়া। জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করছেন দেশটির সাধারণ জনগণ।
১৯৫৭ সালের ৩১ আগস্ট ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে দেশটি। পৃথিবীর মানচিত্রে নিজস্ব ভূখণ্ড নিয়ে মালয় জাতির আত্মপ্রকাশ ঘটে। দেশটিতে স্বাধীনতা দিবসকে মারদেকা ডে বলা হয়। মালয়েশিয়ার ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম গৌরব ও অহংকারের দিন এটি। এদিন জাতীয় দিবসের প্যারেডে সকাল থেকে মানুষের ঢল নামে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়ায় স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিদেশিদের উপস্থিতিতে শুরু হয় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান।
এ সময় প্রভাত ফেরিতে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার রাজা মহামান্য সুলতান ইব্রাহিম এবং রাণী মহামহিম রাজা জরিথ সোফিয়া, প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম তার স্ত্রী দাতুক সেরি ডঃ ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল, উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ডক্টর আহমেদ জাহিদ হামিদি, যোগাযোগ মন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল, যিনি জাতীয় দিবস এবং মালয়েশিয়া দিবস ২০২৪ উদযাপনের প্রধান কমিটির চেয়ারম্যান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দাতুক সেরি মোহাম্মদ খালেদ নরদিন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মন্ত্রী দাতুক সেরি মোহাম্মদ সাবু এবং পরিবহণ মন্ত্রী অ্যান্টনি লোক স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাতুক সেরি ডাঃ জুলকফ্লাই আহমেদ, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী দাতুক সেরি ডাঃ জাম্বরি আবদ কাদির, শিক্ষামন্ত্রী ফাদলিনা ইউসুফ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হান্না ইয়েও দাতুক সেরি ফাদিল্লাহ ইউসুফসহ মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরাসহ দেশটির অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এছাড়া “মালয়েশিয়া মাদানি: জিওয়া মের্দেকা” থিমযুক্ত এই অনুষ্ঠানটিতে উপমন্ত্রী, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিদেশি প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মালয়েশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর হেলিকপ্টারের একটি ফ্লাইটপাস্ট ছিল, যা জাতীয় পতাকা এবং সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা, মালয়েশিয়ার সেনাবাহিনী, রয়েল মালয়েশিয়ার নৌবাহিনী এবং রয়েল মালয়েশিয়ার বিমানবাহিনীর পতাকা বহন করে। স্কুলছাত্রদের থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি খাতের কর্মচারীদের ১৭ হাজারের বেশি লোক প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার প্রতি উৎসর্গীকৃত কুসি রাসুয়াহ শিরোনামে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে উদযাপনের সমাপ্তি ঘটে।
উল্লেখ্য, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে এবং এই অঞ্চলের মধ্যে মালয়েশিয়াই সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যাত্রা তখন থেকেই। ১৯৭৬ সালে মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী আসতে শুরু করে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে শ্রম, শিক্ষা, সামরিক, সাংস্কৃতিক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সম্পর্কের ভিত্তি শক্তিশালী হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। মালয়েশিয়া এখন বাংলাদেশের অন্যতম বড় বাণিজ্য-অংশীদার।
উন্নত মালয়েশিয়া বিনির্মাণে বাংলাদেশি কর্মীদের অবদান অনস্বীকার্য। আগামীতে দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
Source: প্রবাস বার্তা