বাংলাদেশ

মারশাফীর বিরুদ্ধে ভ*য়াব*হ অ*ভিযোগ এনে জামায়াত নেতার ফেসবুক পোষ্ট, মা*রধরও খেয়েছেন

জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ায় জেলা জামায়াতের আমির আতাউর রহমান বাচ্চুর ওপর হামলার অভিযোগ উঠে এসেছে তারই ফেসবুক পোস্টে। ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর হওয়া এ হামলার স্মৃতি উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের পোষ্টে এসব কথা বলেন জামায়াতের জেলা আমির।

পোষ্টে তিনি লেখেন, ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে শহরের কাছে চিত্রা নদীর তীরে একটি চা দোকানে বসেছিলাম। তখন সেখানে এসে একটি ছেলে আমাকে বলল, আমাকে চেনেন? আমি ছাত্রলীগের জেলা সেক্রেটারি নীল। আমি বললাম, তোমার নাম শুনেছি; কিন্তু সরাসরি দেখা হয়নি। তারপর সে নিজের ফেসবুক আইডিতে ঢুকে আমার একটি ছবি বের করে বললো, আপনি কি এমপি নির্বাচন করবেন? আমি বললাম, আমার সংগঠন আমাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। পরিবেশ হলে অবশ্যই করবো। সে বলল, আপনাদের নিবন্ধন নেই কীভাবে নির্বাচন করবেন? আমি বললাম, নিবন্ধন ফিরে পাবো আশা করি। আর না হলে স্বতন্ত্র করবো।

তারপর ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি মুকুল ও অন্য কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বললো, মাশরাফী ভাইয়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন করবি? এত সাহস কোথা থেকে আসে? তোকে অনেক দিন ধরে খুঁজতেছি; কিন্তু পাই না। এরপর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে মাটিতে আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলে। পরে আমাকে চায়ের দোকান থেকে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে চললো আঘাতের পর আঘাত। মুকুল অস্ত্র আমার মাথায় ধরে বললো, আর নির্বাচনের কথা বলবি কিনা? আমি বললাম, আমার সংগঠন যে নির্দেশ দেয়, আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত সেটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।

জামায়াতের ওই নেতা আরও লিখেছেন, ওই সময় জেলা সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ ভাই সেখানে উপস্থিত হয়ে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করে তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করছেন। তখন তারা ওবায়দুল্লাহ ভাইয়ের ওপর আক্রমণ শুরু করলো। একপর্যায়ে তার মুখের ভিতর পিস্তল ঢুকিয়ে গুলি করতে উদ্যত হলো। অন্য আরেকজন পিস্তলের বাট দিয়ে ওবায়দুল্লাহ ভাইয়ের মাথায় প্রচণ্ড আঘাত করলো। বুঝে উঠার আগেই ঘটনাগুলো ঘটে গেল। পরবর্তীতে স্থানীয় জনতা ও দোকানদারদের প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটলো। রক্তাক্ত দেহ ও ছেঁড়া জামাকাপড় নিয়ে বাসায় এসে গিয়েছিলাম।

তিনি আরও লেখেন, এই ঘটনা তখন শুধুমাত্র জেলার কয়েকজন দায়িত্বশীল জানতেন। পরিবেশ এমন ছিলো অন্য সকল জনশক্তি জানতে পারলে তারা হয়তো প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠতো। আর পুলিশ প্রশাসন ও ছাত্রলীগের রোষানলের শিকার হতো।
এদিকে, আরেক অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুজ্জামান মুকুল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যেভাবে জেলা জামায়তের আমির পোস্ট করেছেন- তা পুরোটা ভিত্তিহীন। আমি তো ঘটনার সঙ্গে ছিলামই না। তিনি আমাকে চেনেন কি-না সন্দেহ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা তো দূরের কথা, তার সঙ্গে তো আমার কখনো দেখা বা কথাও হয়নি। তাহলে তার ওপর হামলা কখন চালালাম? হয়তো তার কাছে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।

পোস্টের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার নীল বলেন, জেলা জামায়াতের আমির আতাউর রহমান বাচ্চু সাহেব ফেসবুকে যে মিথ্যাচার করছেন- তা তার কথায় স্পষ্ট। ২০২২ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আমি ছিলাম না। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ইতিহাস ঘাঁটলে আপনারা দেখতে পারবেন নড়াইলের দুটি আসনে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার। কখনো জামায়াত ও বিএনপি সিট পেয়েছে কি-না আপনারা দয়া করে দেখুন। ২০২২ সালে জাতীয় নির্বাচনের কোন তোড়জোড় ছিল না। তাহলে উনাকে (জেলা জমায়াতের আমির) হুমকি বা হামলার কী আছে? মাশরাফী ভাই জনপ্রিয় ছিলেন নড়াইলবাসীর কাছে। আর মাশরাফী ভাই কখনো দমন-পীড়নের রাজনীতি করেননি।

নীল আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের অপতৎপরতা জানান দিতে আর নিজের অবস্থান ভাল করার জন্য জামায়াতের আমিরের এটা একটা কৌশল মাত্র। তিনি মূলত আলোচনায় আসতে মাশরাফী ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে মিথ্যাচার করেছেন। মাশরাফী ভাইয়ের নাম জড়াতে পারলেই তো নিজের প্রচারণা হয়ে গেল। এছাড়া এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button