বাংলাদেশ

নিহ’তের সংখ্যা বেড়ে ৯৫, আরো ম’রদেহ উদ্ধারের আশঙ্কা

স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় এর আগে অন্তত ৫১ জন এরপর অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর বলা হয়েছিল। এখন মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ জনে। দেশটিতে টানা ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি শিলাবৃষ্টিও হচ্ছে। এতে বহু অঞ্চলে বন্যার পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

উদ্ধারকারীরা ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় দেশের সবচেয়ে মারাত্মক এই বন্যায় আরো মরদেহ উদ্ধারের আশঙ্কা করছে। ভূমধ্যসাগরে একটি ঝড় তৈরি হওয়ার পর প্রবল বর্ষণ এবং প্রচণ্ড বাতাস স্পেনে আঘাত হানে। কিছু এলাকায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এক বছরের মতো বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের আনুষ্ঠানিক শোক শুরু হওয়ার কথা ছিল।

পূর্ব ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে জরুরি পরিষেবাগুলোর সমন্বয়কারী সংস্থাটি মৃত্যুর সংখ্যা ৯২জন বলে ঘোষণা করেছে। তারা আরো জানায়, এখনও মরদেহ উদ্ধার এবং সনাক্ত করা হচ্ছে। প্রতিবেশী কাস্টিলা-লা মাঞ্চায় দুইজন মারা গেছে এবং দক্ষিণে আন্দালুসিয়ায় আরো একজনের মৃত্যুর খবর পওয়া গেছে বলে উভয় অঞ্চলের নেতারা সাংবাদিকদের বলেছেন।

সরকারি মন্ত্রী অ্যাঞ্জেল ভিক্টর টরেস পাবলিক ব্রডকাস্টার টিভিইকে বলেছেন, ‘এখনও অনেকে নিখোঁজ লোক থাকার কারণে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

এএফপি সাংবাদিকরা দেখেছেন, ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় শহর ভ্যালেন্সিয়ার উপকূলীয় শহর সেদাভিতে কাদা জলাবদ্ধ রাস্তায় গাড়ির স্তূপ হয়ে পড়ে আছে। স্পেনের আবহাওয়া পরিষেবার মতে, ভ্যালেন্সিয়ার পশ্চিমে চিভা শহরে মঙ্গলবার মাত্র আট ঘণ্টায় ৪৯১ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যেটি প্রায় এক বছরের সমান।

প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাদের পরিবারকে বলেছেন, ‘স্পেন তোমাদের জন্য কাঁদছে… আমরা তোমাদের ছেড়ে যাব না। আমরা যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণের জন্য সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব, যাতে আমরা এই দুর্ঘটনা থেকে বের হয়ে আসতে পারি।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্যার পানি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, সেতু ধসে পড়েছে। রাস্তা দিয়ে চলা পানির স্রোতের সঙ্গে গাড়িগুলো ভেসে যাচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে লোকজনকে গাছ আঁকড়ে ধরে থাকতে দেখা গেছে, পানির তোড়ে ভেসে যাওয়া এড়াতে তারা এমনটি করছিল বলে মনে হয়েছে।

রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশনগুলো বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে আটকা পড়া লোকজনের শত শত কল রিসিভ করছে বলে জানা গেছে। অনেকে তাঁদের প্রিয়জনদের খোঁজ পাচ্ছেন না বলে ফোনে জানিয়েছেন। বন্যাকবলিত কিছু এলাকায় পৌঁছাতে জরুরি পরিষেবার কর্মীরাও হিমশিম খাচ্ছেন।

স্পেনের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে স্থানীয় কর্মকর্তা মিলাগ্রোস তোলন জানান, জরুরি পরিষেবার কর্মীরা ড্রোন ব্যবহার করে মারাত্মক বন্যাকবলিত শহর লেতুরের নিখোঁজ বাসিন্দাদের সন্ধান করছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভ্যালেন্সিয়ার বহু মানুষ সারা রাত ট্রাক অথবা গাড়িতে আটকা পড়েছিলেন। অনেকে ছাদে ও সেতুর ওপরে রাত কাটিয়েছেন। তাঁরা সবাই উদ্ধারের অপেক্ষায় আছেন।

স্পেনের আবহাওয়া দপ্তর আইমেত ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের জন্য রেড অ্যালার্ট আর আন্দালুসিয়ার কিছু অংশের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। সামাজিক মাধ্যম এক্স এ করা এক পোস্টে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ জানিয়েছেন, তিনি ‘উদ্বেগ নিয়ে’ লোকজন নিখোঁজ হওয়ার প্রতিবেদনগুলোর দিকে নজর রাখছেন।সূত্র : এএফপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button