কুমিল্লায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগ
কুমিল্লায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগ
কুমিল্লায় উপজেলা প্রাথমিকের দুই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, হয়রানী ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা হালিমা পারভনি ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ইবনে হোসাইনের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর সম্প্রতি এ অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকূলে মঞ্জুরীকৃত স্লিপ, প্রাক-প্রাথমিক, বই পরিবহনে অনিয়ম এবং বিদ্যালয় মেরামতের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলনে ওই দুই কর্মকর্তার ঘুঘ দাবির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও গত সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আ.লীগপন্থী সহকারি শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের আসনে বসিয়ে পদটি অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগও রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের বরাবর অভিযোগকারী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকরা জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে বিভিন্ন কায়দায় ঘুষ আদায় করেন।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ১০৮টি বিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সিøপের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা ঘুষ আদায় করেছেন ওই দুই কর্মকর্তা।
এছাড়াও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্বে থাকাকালে শিক্ষকদের বদলি, বিদ্যালয়ের রুটিন মেইনটেইন, ওয়াশ ব্লক, প্লেয়িং এক্সেসরিজসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাত থেকে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য করেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ইবনে হোসাইন। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়। বদলি, পদায়ন ও তদন্তের নামে নানা কায়দায় শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন এই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা।
বিভিন্ন সরকারি দিবসের বরাদ্দকৃত টাকা যথাযথভাবে ব্যয় করা হয়নি। এমনকি শিক্ষকদের ভ্রমণ বিল, বিনোদন ভাতা থেকেও টাকা কর্তন করে রাখতেন। উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ইবনে হোসাইনের হস্তক্ষেপে দীর্ঘভুমি বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদটিতে অন্য স্কুল থেকে কোনো শিক্ষক পদায়ন হতে পারছেন না। এখানে মাসুদ ইবনে হোসাইনের বন্ধু আওয়ামীপন্থী সহকারি শিক্ষক মাসেকুল ইসলাম রোমানকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা হালিমা পারভীন অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়ম এবং শিক্ষকদের হয়রানীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কয়েকজন প্রধান শিক্ষক তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য অধিদফতরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজহারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের কপি হাতে পেলে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করব।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র: dailycomillanews