কুমিল্লা রেলস্টেশন যেন মাদকের জংশন
কুমিল্লা রেলস্টেশন যেন মাদকের জংশন
দলে দলে ভাগ হয়ে ঘষছে হাত। মাথার উপরে উড়ছে ধোঁয়া। কোনও দলে কিশোর আবার কোনও দলে মধ্যবয়সী পুরুষ। কোথাও আবার বৃদ্ধদেরও দেখা যায়। কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন এবং আশপাশের এলাকায় মাদকসেবন ও বিক্রির এমন দৃশ্য যেন স্থানীয়দের চোখে সয়ে গেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কাছেও এটি প্রকাশ্য সত্য।
জানা গেছে, সরকারপতন আন্দোলনের পর থেকে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পুলিশের টহল টিম তেমন যেতে পারছে না। যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মাদকসেবী ও মাদকবিক্রেতাদের আড্ডা বেড়েছে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন এবং আশপাশের এলাকায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, কুমিল্লা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের সামনের রেললাইনে, কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ি বিপরীত পাশের প্ল্যাটফর্মে, ধর্মপুর রেলগেটের পার্শ্ববর্তী এলাকায়, শাসনগাছা রেলগেটের পার্শ্ববর্তী এলাকায় এবং অশোকতলা রেলগেট পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রতিদিন বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। এসব আড্ডায় ঘুরে ঘুরে মাদক বিক্রি করে একটি চক্র। এসব মাদকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় গাঁজা ও ইয়াবা। অনেকে মাদক বাইরে থেকে এনে নিরাপদে সেবন করে এলাকা ছাড়ে।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, মাদকবিক্রেতাদের কয়েকটি চক্র এই এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। তাদের মধ্যে বহিরাগতদের পাশাপাশি স্থানীয় কয়েকজনও যুক্ত রয়েছেন। তবে মাদকবিক্রেতাদের কিছু অংশ স্থানীয় হলেও মাদকসেবীদের বেশির ভাগ অংশই বহিরাগত। অনেকেই মাদকসেবনের নিরাপদ স্থান মনে করে কুমিল্লা রেল স্টেশন এবং আশপাশের এলাকাগুলো বেছে নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদকসেবীদের কয়েকজন জানায়, সীমান্ত থেকে বড় চোরাচালান শহরে প্রবেশ করে। অনেক সময় তা বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় আসে। সেখান থেকে তাদের কাছে নিয়ে আসে খুচরা বিক্রেতারা। পরে সেগুলো স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী, স্থানীয় তরুণ-যুবক ও বিভিন্ন বয়সী মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই এলাকায় আমরা থাকি। এখানে ছেলেমেয়ে মানুষ করা কতটা চ্যালেঞ্জিং তা আমরা জানি। কেননা এই এলাকাটা মাদকের অভয়ারণ্য। পুলিশ প্রশাসনকে কদিন পরপর ধরতে দেখি। কদিন পর আবার আগের মতো হয়ে যায়। এসব বিষয়ে সামাজিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনকে আরও শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে।’
কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরান হোসেন বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। আসলে এই বিষয়ে আমরা জানি না। এক্ষুনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। স্টেশন এলাকায় মাদকের জিরো টলারেন্স হবে।’
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন
সূত্র: dailycomillanews