বাংলাদেশ

‘ছাত্রদল পরিচয়ে’ ফের গণরুম খুললো ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীরা

‘ছাত্রদল পরিচয়ে’ ফের গণরুম খুললো ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীরা

রাজধানী ঢাকা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (টিটি কলেজ) একমাত্র পুরুষ (স্নাতক) হলে ফের চালু হয়েছে গণরুম কালচার। এ ঘটনায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া ২৯তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা নিয়ম মেনে হলের ভর্তি সম্পন্ন করার পরও তাদের কোনো সিট বরাদ্দ দেয়নি কলেজ প্রশাসন। সিটের কথা বললেই নানা তালবাহানা করে হল সুপার সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আক্কাস আলী।

নবীন এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তারা হলের সিট চাইলে, হল সুপার সিনিয়রদের কাছে যেতে বলেন। পরে তারা বাধ্য হয়ে ইমিডিয়েট সিনিয়রদের শরণাপন্ন হলে তারাও রুম না দিয়ে গণরুমে তুলে দিয়েছে।

নবীন আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ২৮তম ব্যাচের ভাইয়েরা তাদেরকে জোর করে গণরুমে দিয়েছে। তারা থাকতে চাইনি। তাদেরকে শৃঙ্খলা শেখানোর নামে র‍্যাগিং করে এবং মানসিক নির্যাতন করে।

এ বিষয়ে সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থী (২৮তম) শেখ হান্নান বলেন, কলেজ প্রশাসনের গাফিলতির কারণে জুনিয়ররা তাদের কাছে আসছে এবং তারা নিরুপায় হয়ে তাদেরকে গণরুমে তুলে দিতে বাধ্য হয়েছে। তবে র‍্যাগিংয়ের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিতীয় তালায় রিডিং রুমের পাশের গণরুম (মূলত হলের এটি গেস্টরুম) বলে পরিচিত রুমটিতে নবাগত শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। এর আগে রুমটি তালাবন্ধ ছিল। তবে ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রওশন সম্প্রতি তালা ভেঙে রুমটিতে প্রবেশ করেছেন এবং এই গণরুম চালু করার নেপথ্যে কাজ করেছেন ২৩তম ব্যাচের শরীফ ও ২৫তম ব্যাচের ইভান ও আহমেদ মুসা। যারা বর্তমানে ছাত্রদলের ব্যানারে থাকলেও সাবেক ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন বলে একাধিক সূত্রে জানা নিশ্চিত হওয়া গেছে।।

জানা গেছে, তারা নিষিদ্ধ সংগঠন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির সভাপতি হাসিবুর রহমানের অনুসারী। এ বিষয়ে ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শরীফ বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না, আমি কোনো নির্দেশ দেয়নি।

অন্য অভিযুক্ত ২৫তম ব্যাচের মুসা বলেন, শিক্ষার্থীরাই গণরুম চেয়েছে তাদের দাবির প্রেক্ষিতেই তাদের গণরুম দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক রিজিয়া সুলতানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ক্যাম্পাসে কোনো গণরুম নেই, গণরুমে এক মাস আগেই তালা দিয়েছেন।

পরবর্তীতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে গণরুম থাকার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করা হলে তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেন। তিনি জানান, ঘটনার সততা পেলে আজকের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে হল সুপার মোহাম্মদ আক্কাস আলীকে বারবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৯ নভেম্বর ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠার পর বাতিল হয়েছে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ শাখা ছাত্রদল কমিটি। সেদিন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিল।

এর আগে বিকেলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে ‘ছাত্রদলের মিছিলে অংশ নিলেন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’। এতে ছাত্রদলের মিছিলের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের খবর প্রকাশিত হয়।

এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ শাখা ছাত্রদল কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বলে জানা যায়।

সূত্র: dailycomillanews

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button