যুগ্মসচিবের ধমকে অজ্ঞান প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিচার দাবি
যুগ্মসচিবের ধমকে অজ্ঞান প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিচার দাবি
মঙ্গলবার সচিবালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব নাদিরা সুলতানা ধমক খেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
দাপ্তরিক কাজে তিনি ওই কর্মকর্তার কাছে গিয়েছেন। গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত একটি সভার কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষর আনতে গেলে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় যুগ্মসচিব ড. নাদিরা সুলতানা তাকে ধমকদেন এবং তিনি ধমক খেয়ে মাটিতে লুটে পড়েন।
আসলাম নামে আরেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, আমি ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং যুগ্মসচিব ম্যাডাম আমার সামনেই দুর্ব্যবহার করেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে জিয়াউর রহমান তৎক্ষণাত অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন এবং তিনি ঘটনাস্থলেই দুইবার বমি করেন।
খবর পেয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারি সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবিরের নেতৃত্বে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের কর্মচারীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং চিকিৎসার জন্য অচেতন অবস্থায় উক্ত কর্মকর্তার অফিস কক্ষ থেকে উদ্ধার করে সচিবালয় ক্লিনিকে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার সংবাদ মুহুর্তের মধ্যে বাংলাদেশ সচিবালয়ে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে কর্মচারীগণ দলবদ্ধ হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও অতিরিক্ত সচিব(এপিডি) দপ্তরে ঘটনার জন্য দায়ী কর্মকর্তাকে তাৎক্ষনিক অবমুক্ত করে সচিবালয় থেকে দূরবর্তী স্থানে বদলীর জন্য দাবী তোলেন।
কর্মচারিরা তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের এবং সচিবালয়ের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করা ও বিশৃঙ্খলার দায়ে চাকুরী থেকে অপসারণের দাবী জানান। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করলে কর্মচারীরা শান্ত হয়।
কর্মচারিরা সচিবালয়ের নন-ক্যাডার থেকে উচ্চ পদে পূর্বের ধারাবাহিকতায় প্রাপ্য কোটা (যুগ্মসচিব, উপসচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব এবং সহকারী সচিব) অনুযায়ী পদ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন সময়ে দাবী করে আসছেন।
ওই দাবির প্রেক্ষিতে যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সর্বশেষ অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণীতে অর্থ বিভাগের সদস্য ছাড়া বাকী ১০ জন সদস্য স্বাক্ষর করেন। কিন্তু অর্থ বিভাগের সদস্য উক্ত কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষর না করে দীর্ঘ সময় ক্ষেপন করেন।
অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব, ড. নাদিরা সুলাতানা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশ ও পদ সংরক্ষণ সংক্রান্ত সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এবং নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করেছেন বলে কর্মচারিদের অভিযোগ। কর্মচারিদের অভিযোগ এই কর্মকর্তা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে দীর্ঘদিন সচিবালয় অবস্থান করেছেন এবং এখনো সরকারির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন।
সূত্র: dailycomillanews