বাংলাদেশ

ডাল-ভাতের দাওয়াত ঘিরে ছাত্রদলের দু’পক্ষের উত্তেজনা, বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার

ডাল-ভাতের দাওয়াত ঘিরে ছাত্রদলের দু’পক্ষের উত্তেজনা, বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার

ডাল-ভাতের দাওয়াত শীর্ষক এক পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় বাকবিতণ্ডা থেকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হলে তৎসংলগ্ন বিএনসিসি ভবনের পেছন থেকে ককটেল সদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাবির হোসাইন সাব্বিরের ‘ডাল-ভাতের দাওয়াত’ শীর্ষক প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিকের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহান তার দলবল নিয়ে আসলে এই আয়োজন নিয়ে সাব্বির রহমান ও তার অনুসারীদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের উপক্রম হলে সাবেক বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মীমাংসা হয়।

এদিকে দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি (বাংলাদেশ ন্যাসনাল ক্যাডেট কোর) ভবনের পেছনে বোমা সদৃশ বস্তুর উপস্থিতি জানতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা ও আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরবর্তীতে পুলিশ এসে বোমা সদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করে পানি দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে প্রবেশ করে নেতৃস্থানীয়দেরকে দ্রুত আয়োজন শেষ করে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে ছাত্রদলের এক পক্ষের এ আয়োজনে নেতাকর্মীদের সাথে বহিরাগতদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। সাভারের কলমা ও রোয়ালিয়া থেকে আগত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে বহিরাগতের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এসময় একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে জানা যায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা নবিনুর রহমান নবিন এবং হুমায়ুন হাবীব হিরণের আমন্ত্রণে এই অনুষ্ঠানে এসেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ.এক.এম রাশিদুল আলম বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমরা সংবাদ পাই বিএনসিসি অফিসের পেছনে বোমা সদৃশ বস্তু পাওয়া গেছে। নিরাপত্তা শাখা থেকে আমাকে কনফার্ম করা মাত্র আশুলিয়া থানার এডিশনাল এসপিকে অবহিত করি। এডিশনাল এসপি শাহিনুল কবিরের উপস্থিতিতে সেটি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করবো।

আয়োজনে বহিরাগতদের উপস্থিতির প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা চাই না কোনোভাবেই এ ধরণের ঘটনা ঘটুক। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা সাবেক অ্যালামনাই আছেন তাদেরও সচেতন হওয়া উচিৎ। তাদের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান করা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাবির হোসাইন সাব্বির বলেন, আমরা সাবেক-বর্তমানরা মিলে একটা আয়োজন করেছিলাম। এখানে নিজেদের মধ্যে আলাপ হয়েছে, কোনো বাকবিতণ্ডা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার এডিশনাল এসপি শাহিনুল কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কল পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। ঘটনাস্থল থেকে লাল টেপ দিয়ে পেঁচানো বোমাসদৃশ একটি বস্তু উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করেছি। অবস্থাদৃষ্টে আমাদের মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার লক্ষ্যে কেউ এই কাজটি করেছে৷ নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে সার্বিকভাবে সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানোর জন্য। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এখানকার নিরাপত্তা বজায় রাখা।

সূত্র: dailycomillanews

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button