বাংলাদেশ

নিয়ম ভেঙে এক দিনে দুই মাসের স্বাক্ষর করলেন শিক্ষক

জুমবাংলা ডেস্ক : পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই মাস বিদ্যালয়ে না এসেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. নূরুল ইসলাম। তিনি নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন‌।

আজ রবিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে গত দুই মাস এই শিক্ষকের অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া একদিনে হাজিরা খাতায় দুই মাসের স্বাক্ষর করার প্রমাণও মিলেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সহকারী প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম গত ১৭ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করেন। সম্পদের বিবরণীর কাগজ অফিস সহকারীর নিকট জমা দিয়ে শিক্ষক হাজিরা খাতায় তিনি স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর শেষ করেই তড়িঘড়ি বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। এসময় শিক্ষকদের সন্দেহ হলে টেবিলের উপর পড়ে থাকা হাজিরা খাতা খুললে দেখা যায় বিগত সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখ থেকে নভেম্বরের ১৬ তারিখ পর্যন্ত তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়া ১৭ তারিখে এসে ১৮ নভেম্বরের অগ্ৰীম স্বাক্ষরও করে যান নূরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ১৭ নভেম্বর হঠাৎ করে স্যার (নূরুল ইসলাম) স্কুলে আসেন‌। স্যারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে আমি ক্লাসে যাই। পরে এসে জানতে পারি তিনি ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত স্বাক্ষর করে যান। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি সর্বশেষ স্কুলে এসেছিলেন।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী সফিউল ইসলাম বলেন, সেদিন স্যার আমাকে ফোন দিয়ে বলেন সম্পদের বিবরণীর জমা দিতে আসবেন। সম্পদের বিবরণী জমা দিয়ে নভেম্বর মাসের ১৯ এবং ২০ তারিখের ছুটির কাগজ জমা দিয়ে যান। পরে জানতে পারি তিনি বিগত অনুপস্থিত দিনগুলোতে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন।

অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, তিনি যদি এমনটা করে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে কি না জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখবো। যদি তিনি এমনটা করে থাকেন তাহলে আমরা ডিপার্টমেন্টকে জানাবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর নূরুল ইসলামের দুর্নীতি ও অনিয়মের শাস্তি এবং অন্যত্র বদলির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর থেকে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button