বাংলাদেশ

সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

জুমবাংলা ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরপরই ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে গভর্নিং বডির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক একত্রে এ কাজ করেছেন।

বিদ্যালয়টির নাম আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। বর্তমানে গভর্নিং বডির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির। এ বিষয়ে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ বাণিজ্য এবং অনিয়মের কথা উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানা এক পরীক্ষার্থী।

অভিযোগে যা আছে- বিনিত নিবেদন এই যে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম যে অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি ও তার ভাতিজা আওয়ামী লীগ এর প্রভাবশালী, শিল্পপতি ও আওয়ামী লীগ এর দাতা সদস্য। স্কুলটি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সভাপতি তার একক ক্ষমতাবলে স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্য, স্কুলের যাবতীয় আয়ের টাকা, স্কুলের গাছ কেটে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকার হিসাব চাওয়ায় জামাল উদ্দিন স্যারকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে স্যার হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আবার যোগদান করেছিলেন। বাস্তবে ট্রাস্টের কোন কার্যক্রম নেই।

“আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কমিটির সবাই মিলে আট লক্ষ টাকা নিয়েছে। যার যাবতীয় প্রমাণসহ তদন্তের দিন আমরা উপস্থিত থাকিব। পূর্ব নির্ধারিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য পবিত্র মাহে রমজান মাসের ১৪ মার্চ রোজ শুক্রবার বেছে নিয়েছেন। তথ্য সূত্রে জানা যায়- হাতে হাতে এবং ডাকযোগ আসা অনেক আবেদন গোপন করে, আবেদন বাতিল এবং ইন্টারভিউ কার্ড প্রেরণ না করে মনোনীত ব্যক্তিদের দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পায়তারা করছে। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের যেখানে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ থাকার পরেও সভাপতি তার হীন উদ্দেশ্যে স্বাধনের জন্য পবিত্র মাহে রমজানে পরীক্ষা নিতে চাচ্ছেন যা আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে সংস্থায় পরিচালিত কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকার পরও কর্তৃপক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছেন আর আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তার পূর্বনির্ধারিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তাড়িগড়ি পবিত্র মাহে রমজানের সময়কে বেছে নিয়েছেন।”

“অতএব মহোদয় সমীপে বিনিত নিবেদন এই যে দ্রুত নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করে স্বর জমিনে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে আপনার মর্জি হয়।”

অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনিয়মের কোন সুযোগ নেই, প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এই বিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের দুর্নীতি এবং অনিয়ম হয়নি।

আব্দুল আজিজ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির খোলা কাগজকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গোপন রেখে নিয়োগ দেওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্যবৃন্দ ও শিক্ষকদের সম্মতিক্রমে ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তারিখ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে দৈনিক সমকাল এবং শতাব্দীর কন্ঠ পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে যারা আবেদন করেছিল তাদের সবার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে, লিখিত পরীক্ষার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. খাদেমুল ইসলাম খোলা কাগজকে বলেন, আমরা সরকারি নিয়মকানুন মেনেই বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়েছি। কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এ রকম একটি মিথ্যা ও বানোয়াট বিষয় আমার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ খোলা কাগজকে বলেন, নিয়োগের বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি করা হয়েছে জেলা প্রশাসক বরাবর। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমরা এখনো কোন চিঠি পাইনি, যদি চিঠি পাই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

কিশোরগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুন নাহার মাকছুদা খোলা কাগজকে বলেন, অভিযোগের কপিটি পেয়েছি অভিযোগ করা হয়েছে জেলা প্রশাসক বরাবর। যদি ডিসি স্যার আমাকে দায়িত্ব দেয় তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলে ফোন রিসিভ করেননি।

সোর্স: জুম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button