ভারতের ইতোমধ্যেই কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে
বিএনপি নেতাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে জনগণের প্রধান রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা ছাত্র-জনতার বিপ্লবে অংশ নিয়েছেন, নতুন শাসনতন্ত্র প্রণয়নে তাদের একটি জাতীয় কাউন্সিল হবে।
সেখানে বিএনপিও থাকবে এবং তাদের প্রধান দায়িত্ব সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করা। রাজনৈতিক দল কীভাবে নির্বাচনে আসবে, সেই গঠনতন্ত্র তৈরি হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের দাবি তোলা যাবে না। গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদী নাগরিক সমাজ আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন ফরহাদ মজহার।
বিএনপি ইতোমধ্যে ক্ষমতায় চলে এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা এই জনগণের মধ্যেই আছে। দলকে সামনে আনা যাবে না। আগে রাষ্ট্র গোছাতে হবে। শত্রুকে মোকাবিলা করতে হবে। সংবিধান উৎখাত করার জন্য লড়াই হয়েছে। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের মনের অভিপ্রায় লিখিত হওয়া পর্যন্ত সরকারকে সময় দিতে হবে। নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকতে হবে।
গণঅভ্যুত্থানের পরপরই বিএনপির সমাবেশের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, এতে ভুল বার্তা গেছে। তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চাইলেন, কেন করলেন? উদ্দেশ্য কী? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি কিন্তু পারেনি এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ঠেকাতে। তারা ছাত্রদের পেছনে ছিল।
ফরহাদ মজহার বলেন, প্রয়োজনে তারেক রহমান চাইলে তিনি লন্ডনে গিয়ে কথা বলবেন। লন্ডনে কার সঙ্গে কথা বলতে হবে, কোন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে, প্রয়োজনে সে ব্যবস্থা করা হবে।
নানা ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, বিএনপিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ভারত জানে, বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে যে কোনো সময় খুনি হিসেবে বাংলাদেশ চাইতে পারে এবং তারা দিতে বাধ্য। ১৫ ও ২১ আগস্ট একটা গণহত্যার পরিকল্পনা ছিল। এসব রুখে দেওয়া গেছে। যে কোনো মুহূর্তে ভারত কিন্তু এখানে গণহত্যা করতে পারে।
সেমিনারে ঢাবির প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু দায়িত্বের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে– জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা, জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, গণমুখী শিক্ষানীতি তৈরি ও দুর্নীতি দূর করা।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।