মতামত

আওয়ামী লীগ আর কতবার গণহত্যা সংঘঠিত করলে নিষিদ্ধ হবে?

সংগঠন হিশেবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো আওয়ামী লীগও গনহত্যার দায় এড়াতে পারে না। দুনিয়ার ইতিহাসে যেসব রাজনৈতিক দল গনহত্যা করেছে, নিষিদ্ধ হয়েছে। নাৎসি পার্টি, ফ্যাসিস্ট পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অনেক দেশেই নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে, ইত্যকার যুক্তি অসার আর হাস্যকর।

মুসলিম লীগও আন্দোলন করে পাকিস্তান হাসিল করেছিলো। শেখ মুজিব ছিল সে দলের নেতা। মুসলিম লীগ ভেঙে আওয়ামী লীগ করে শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক পর্যন্ত হয়েছিলো। স্বাধীনতাপন্থী ভাসানী ন্যাপ ও কমিউনিস্টদের হাত থাকে “পাকিস্তানের অখন্ডতা” রক্ষার ঘোষনা দিয়ে ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিব মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী পার্টি, ও জামায়েত-ই-ইসলামী, এই তিন দলের সাথে ডেমোক্রেটিক একশন কমিটি নামে একটি জোট তৈরি করে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়েও আওয়ামী লীগ অফিশিয়ালী জোট ভাঙ্গেনি।

১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করার অজুহাতে উল্লেখিত তিনটি দলকেই নিষিদ্ধ করেছিলো। মুসলিম লীগের ঐতিহ্য, পাকিস্তানী জনগণের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষও যে আন্দোলনে অংশ নেয়) স্বাধীনতা আন্দোলনে দলটির অবদানের কথা আওয়ামী লীগ গ্রাহ্য করেনি। যদিও মুসলিম লীগ বা পাকিস্তান সরকার নির্বাচনে কখনও কারুচুপি করেনি। ১৯৫৪ ও ১৯৭০, দুই নির্বাচনেই যুক্তফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগ ৯৯% সিট জিতেছিলো।

কিন্তু আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে গনহত্যা করেছে, কৃত্রিম দূর্ভিক্ষ বাঁধিয়েছে, ব্যাঙ্ক ডাকাতি করেছে, এক দলীয় শাসন চাপিয়েছে।

গণতন্ত্র তো বটেই, যে কোন পলিটিক্যাল সিস্টেমের ফন্ডামেন্টাল রুল হচ্ছেঃ কোন দল যদি ক্ষমতায় এসে সবার জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য রুলগুলো এবং সিস্টেমটাই বাতিল বা নষ্ট করে দেয়, সে সিস্টেমে দলটির অংশগ্রহনের অধিকার থাকে না।

২০২৪ ছাত্র-গনহতা, ২০১৩ শাপলা গণহত্যা, ২০০৯ বিডিআর গণহত্যা, ২০০৭ লগি-বৈঠা গণহত্যার পাশাপাশি ১৯৭২-৭৫ সালে ৩৭ হাজার বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী হত্যা, দূর্ভিক্ষে আড়াই লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়! ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল শাসন কায়েম করেছে, মোট চার বার একতরফা ভূয়া নির্বাচন করেছে; প্রতিবার ভোট ডাকাতি করেছে, সংবিধানে ইচ্ছে মতো নির্বাচনী আইন পরিবর্তন করেছে।

সোজা কথায়, আওয়ামী লীগ প্রতিবার পুরো সিস্টেমটাই ধ্বংস করেছে। এর পরেও আসিফ নজরুল যদি বলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার পক্ষপাতী উনি নন, আমার প্রশ্নঃ
আওয়ামী লীগ আর কতবার গনহত্যা সংগঠন করলে, আর কত লাশ ফেললে, ক্ষমতায় এসে আর কতবার ডিক্টেটরশীপ শাসন চালু করলে উনি নিষিদ্ধের পক্ষপাতী হবেন?

-Shibly Azad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button