শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাবেক সংসদ সদস্যদের নামে আমদানি করা ৫২টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছিল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর দিয়ে এসব গাড়ি আমদানি করা হয়। তবে, জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও নায়ক ফেরদৌসসহ সাত সাবেক এমপি তাদের গাড়ি ছাড়িয়ে নেন।
এছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আর হেনরী এবং মুজিবুর রহমান মঞ্জু সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও গাড়ি খালাস নিতে পারেনি। এছাড়া অনুপম শাহজাহান জয় ও এবিএম আনিসুজ্জামান নামে আরও দুই সাবেক এমপি গাড়ি ছাড় করাতে নথিপত্র জমা দিয়েছিলেন। এই চারটি গাড়িও এখন কাস্টমসের জিম্মায়।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ফলে শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল হয়ে যায়। তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল হওয়ায় এসব গাড়ি খালাস করতে হলে সিসি ভেদে ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হতে পারে।
গাড়িগুলোর মধ্যে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট মডেলের ৩ থেকে ৪ হাজার সিসির গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ির বেশিরভাগই এসেছে জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু সংসদটা ভেঙে গেছে। এখন শুল্কমুক্ত সুবিধা তারা পাবেন কি না, সে বিষয়ে সরকারের দিকনির্দেশনার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমের পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে চিঠি দিয়েছি। সেই চিঠির জবাবে যে নির্দেশনা দেয়া হবে, সে আলোকে আমরা পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবো।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘কাস্টমস কর্তৃক ডিউটি পেমেন্ট করার পরেই আমরা চার্জটা নিই এবং ডেলিভারি করি। কেউ যদি ডেলিভারি নিতে না আসে তাহলে ৩০ দিন পর নিলামের জন্য হস্তান্তর করে দিই।’
এর আগে পর্যটন সুবিধায় আনা শত কোটি টাকা মূল্যের ১০৮টি গাড়ি বারবার নিলাম আহবান করেও বিক্রি করতে পারেনি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। স্ক্র্যাপ হিসাবেও এখন এসব গাড়ি কেউ কিনছে না। তাই শুল্ক মুক্ত অবস্থায় সংসদ সদস্যদের আনা গাড়ি নিলামে বিক্রির চেষ্টা না করে সরকারের জিম্মায় নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশনড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স এন্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘অতি দ্রুত এটা সরকারি কোনো সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে ওদের টাকাগুলো দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কোনোভাবেই যেনো গাড়িগুলো নিলামে না যায়। নিলামে গেলে গাড়িগুলো কোনোভাবেই ছাড় পাবে না।’